দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব

দক্ষতা নিয়ে প্রথমত কিছু বেসিক জিনিস নিয়ে বলি,

প্রথমত বলি দক্ষতা কি জিনিস?

কোন কিছু জানাকে জ্ঞান বলে। জ্ঞানকে কাজে লাগানোর ক্ষমতাকে দক্ষতা বলে।


এছাড়াও চাকরির দক্ষতা আপনাকে সুনির্দিষ্ট চাকরির জন্য প্রস্তুত করে। আবার লাইফ স্কিলগুলো দৈনন্দিন কাজের জন্য প্রস্তুত করে তোলে।


বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা রয়েছে; যা আপনার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেমন- স্কুল, কলেজ, অফিস, এমনকি খেলাধুলা বা শখের ক্ষেত্রেও সফল হতে সাহায্য করে।


প্রত্যেক ক্যারিয়ারের জন্যই কিছু নির্দিষ্ট, প্রয়োজনীয় বা কাঙ্খিত জ্ঞান, দক্ষতা ও সক্ষমতা রয়েছে। যা কাজে সফলতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই আমাদের সবার দক্ষতা অজর্ন করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।


 দক্ষতা কত ধরনের হতে পারে?

 এটি সাধারণত অনেক রকম হয় কিন্তু আমি ৫ টা ধরন নিয়ে আলোচনা করছি,


ক.  স্থানান্তরযোগ্য (Transferable)

খ.  ব্যক্তিগত দক্ষতা (Personal Skill)

গ.   জ্ঞানভিত্তিক দক্ষতা (Knowledge-based Skill)

ঘ.   সফট স্কিল (Soft Skill)

ঙ.   হার্ড স্কিল (Hard Skill)


হয়তো প্রশ্ন আসবে এগুলা কিরকম  চলেন বলি!


 স্থানান্তরযোগ্য দক্ষতাঃ এটি এমন প্রতিভা ও সক্ষমতা যা বিভিন্ন চাকরি এবং ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। এগুলি চাকরি, স্কুল, কলেজ, ইন্টার্নশিপ, হবি ও স্বেচ্ছাসেবার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে।

যেমন- ভাষা দক্ষতা,  কেননা আপনি কোন দেশে স্থানান্তরিত হলে তখন এটি খুব ভালো ভুমিকা পালন করবে।


ব্যাক্তিগত দক্ষতাঃ এ ধরনের দক্ষতার হলো কর্ম সম্পাদনের ক্ষেত্রে দরকারি ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য বা মনোভাব। এ ধরনের স্কিল শিশুকাল থেকে জীবনের বিভিন্ন স্তরে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে উন্নত হয়। যেমন পরিবার হলো আমাদের এই দক্ষতার শুরুতম স্থর।


 যেমন- ধৈর্যশীল, কুশলী, স্বাবলম্বী ইত্যাদি। যা পরিবার ও স্কুল থেকে আমরা শিখতে পারি।


জ্ঞানভিত্তিক দক্ষতাঃ  নির্দিষ্ট বিষয় এবং তথ্য সম্পর্কিত জ্ঞান; যা নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করতে প্রয়োজন। জ্ঞানভিত্তিক দক্ষতা হলো শিক্ষা, এছাড়াও প্রশিক্ষণ ও কাজের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়।


 উদাহরণস্বরূপ- ধর্মীয় বই পড়া দক্ষতা অর্জন, বিজ্ঞান সম্পর্কে ইত্যাদি 


সফট স্কিলঃ  সফট স্কিল হচ্ছে একজন মানুষের ব্যক্তিগত গুণাবলি; যা তার চাকরি, ক্যারিয়ার বা কাজের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।

 যেমন- গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ইত্যাদির ওপর স্কিল।


হার্ড স্কিলঃ  হার্ড স্কিল মূলত নির্দিষ্ট কোনো পেশা বা কাজ সংক্রান্ত জ্ঞান ও যোগ্যতা; যা একজন চাকরিজীবীর দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে দরকার হয়। এছাড়াও এমন দক্ষতাকে বোঝায় যা সুনির্দিষ্ট কাজে প্রয়োগ করা যায় ও সঠিকভাবে যার মূল্যায়ন করা সম্ভব। সাধারণত টেকনিক্যাল দক্ষতাগুলো এ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। 


যেমন: প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ লিখতে পারা, টাইপিং এ দক্ষ, গ্রাফিক্স ডিজাইনারের প্রয়োজনীয় ইলাস্ট্রেটর/ ফটোশপ এর টুলস সম্পর্কে জ্ঞান, কম্পিউটারের খুটি নাটি বিষয় নিয়ে জ্ঞান।


দক্ষতা বাড়ানোর উপায় কী?


আপনার দক্ষতা বাড়ালে ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে তার সুফল পাবেন। আমার মতে দক্ষতা বাড়ানোর উপায় বাছাইকৃত ভাবে,


১. আপনি যে দক্ষতাগুলো বাড়াতে চান তার একটি তালিকা করুন। 

যেমনঃ আপনার সাম্যর্থ অনুযায়ী দক্ষতা সমুহ খুজে লিস্ট করে নেওয়া


২. দক্ষতার উন্নয়নে সময় ও অর্থ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিন।

যেমনঃ নিজের প্রতি সময় দিয়ে চিন্তা করুন কোন দক্ষতা আপনার জন্য কমফোর্টেবল হবে আর আপনি পারবেন


৩. বাস্তব লক্ষ্য ও মাইলস্টোন নির্ধারণ করুন।

যেমনঃ লক্ষ্য ছাড়া কোন কিছুই সম্ভব নয় তাই একটা সময় নিধারিত করে মাইলস্টোন নির্ধারণ করুন।


৪. একজন কোচ বা মেন্টর খুঁজে নিন।

যেমনঃ কোন প্রশিক্ষণদাতা বা একজন অভিজ্ঞ ব্যাক্তির কাছে পরামর্শ নেওয়া


৫. লক্ষ্য বাস্তবায়নে একটি সুন্দর পরিকল্পনা করুন।

যেমনঃ প্রতিদিনের রুটিনের মতো করে নিজেকে গুছিয়ে নিন এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী পরবর্তী দিনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন।


৬. সহযোগিতা নিন।

যেমনঃ আপনার মেন্টর থেকে বা অভিজ্ঞ কারো থেকে সাহায্য নিন যদি না হয় তবে টিম বানিয়ে কাজ করুন।


৭. অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করুন।

যেমনঃ প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে রিপোর্ট তৈরি করুন কতটুকু এগিয়েছেন।



দক্ষতা কিভাবে অর্জন করবেন?


ধাপ-১> আপনার দক্ষতাকে চিনুন!💭

আপনার অনেক ধরনের দক্ষতা থাকতে পারে, দক্ষতা শুধু জ্ঞান নয়। এটা মানুষের ভেতরে এক ধরনের গুণ। নিজে যাচাই করে দেখুন কোন দক্ষতার মাধ্যমে আপনি নিজেকে এগিয়ে নিতে পারছেন।


ধাপ-২> দক্ষতা সেটি যা করার মাধ্যমে আপনি আনন্দ পাবেন?

আপনি যেই কাজে ইন্ট্রেস্টেড না সে কাজে আপনি কখনো সফল হতে পারবেন না। আবার অনেকে দক্ষতা অর্জনের চেস্টায় থাকে শুধুমাত্র টাকা ইনকামের জন্য, টাকা কখনো সুখ আনে না, তাই টাকার পিছনে না দোড়ে নিজের স্কিল নিয়ে ভাবতে হবে।


ধাপ-৩> দক্ষতা উন্নতি করুন

নিজের দক্ষতা আছে বলে বলে দোড়ালে হবে না সেইটাকে কাজে লাগাতে হবে, এছাড়াও সবসময় চেস্টায় থাকতে হবে কিভাবে নিজেকে নিয়ে উন্নতি করা যায়, অন্যর পিছু না লেগে নিজেরটা দেখতে হবে।


ধাপ-৪> টিম তৈরি করে দক্ষতার বিস্তার করুন!

একটা টিম মানুষকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, দক্ষতাটা শুধু নিজের মধ্যে না রেখে মানুষকে স্কিল শিখানোর মাধ্যমে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবেন নিজে ও অনেক কিছু জানতে পারবেন।


ধাপ-৫>সমালোচনার মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখা

অনেক সময় অনেক দিন কাজ করার পর ও ভালো ফলাফল না আসলে মানুষ হেয় করবে এছাড়াও বিভিন্ন কারণে হেয় করতে পারে তাই অন্যর কথা না শুনে নিজেকে দৃঢ় রাখুন নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন। কথায় আছে না "পিছু লোকে কিছু বলে" এভাবে আপনি ও ভালো কাজ করতে গেলেই আপনি সমালোচনার শিকার হবেন।

"সমালোচনা করতে যোগ্যতা লাগে না সমালোচিত হতে যোগ্যতা লাগে" মনে রাখবেন।


ধাপ-৬> কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন

নিজের কাজের জন্য টার্গেট নিয়ে কাজ করুন যেমন মাস/সপ্তাহ নিয়ে টার্গেট রাখুন এভাবে টার্গেট বড় করার মাধ্যমে কাজকে আরো দ্রুত ও উন্নত করুন।





Comments

Popular posts from this blog

কপি, কাট এবং পেষ্ট

Digital_Marketing

প্রিন্টার কি এবং কিভাবে কাজ করে